পৃথিবীর প্রথম স্টিলথ ফাইটার এয়ারক্রাফট এফ-১১৭ নাইটহক
লকহিড এফ-১১৭ নাইটহক হচ্ছে একটি এক আসন ও দুই ইঞ্জিনবিশিষ্ট স্টিলথ অ্যাটাক এয়ারক্রাফট। যা ডেভেলপ করা হয়েছিল লকহিড এর সিক্রেটিভ স্কাংক ডিভিশনের দ্বারা এবং পরিচালিত হয়েছে ইউএস এয়ারফোর্স এর দ্বারা। এফ-১১৭ নির্মিত হয়েছিল মূলত ‘হ্যাভ ব্লু’ টেকনোলজির বাস্তব রূপদানকারী হিসেবে। এটা ছিল প্রথম অপারেশনাল এয়ারক্রাফট যা স্টিলথ প্রযুক্তির আলোকে নির্মিত হয়েছে। নাইটহকের প্রথম উড্ডয়ন হয় ১৯৮১ সালে এবং প্রারম্ভিক অপারেটিং স্ট্যাটাস অর্জন করে ১৯৮৩ সালে। এফ-১১৭ কে গোপনীয়তার সাথে আড়ালে রাখা হয়েছিল ১৯৮৮ সালে এটাকে জনসম্মুখে প্রকাশ করার পূর্ব পর্যন্ত। .
এফ-১১৭ ব্যাপক প্রচারণা লাভ করে ১৯৯১ সালে পারস্য উপসাগর যুদ্ধে তার ভুমিকার কারনে। যদিও এটাকে সাধারণভাবে স্টিলথ ফাইটার হিসেবে ব্যক্ত করা হয়। তবে এটা যথাযথভাবেই একটা অ্যাটাক এয়ারক্রাফট। এফ-১১৭ যুগোস্লাভিয়া যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিল। ২৭ মার্চ ১৯৯৯ সালে সেখানে একটি এফ-১১৭ ভূপাতিত হয়েছিল সারফেস টু এয়ার মিসাইল (স্যাম) এর আঘাতে। এটাই একমাত্র নাইটহক যা যুদ্ধে ধংস হয়েছে। ইউএস এয়ারফোর্স এফ-১১৭ কে ২২ এপ্রিল ২০০৮ সালে অবসরে পাঠায়। যখন প্রাথমিকভাবে এফ-২২ র্যা পটর কে মাঠে নামানো হচ্ছিলো। ৬৪ টি এফ-১১৭ নির্মিত হয়েছে, যার মধ্যে ৫৯ টি হচ্ছে প্রোডাকশন ভার্সন ও বাকি ৫ টি হচ্ছে ডেমনস্ট্রেটর/প্রোটোটাইপ ভার্সন।
এফ-১১৭ মূলত তৈরি হয় ভিয়তনাম যুদ্ধের অভিজ্ঞতা থেকে। যেখানে ক্রমবর্ধমানভাবে বাস্তবধর্মী সোভিয়েত স্যাম এর দ্বারা ভারী বোমারু বিমান ভূপাতিত হতে থাকে। এটা ছিল একটা ব্ল্যাক প্রজেক্ট এবং খুবই গোপন প্রোগ্রাম। ১৯৯০ সালে জনসম্মুখে প্রকাশের পূর্বে খুব কম লোকই এটা সম্পর্কে জানতো যে, এটা এখনো আছে। প্রকল্পটি ১৯৭৫ সালে শুরু হয় একটি মডেল দিয়ে যার নাম ‘হোপলেস ডায়মন্ড’। একই বছর ডিফেন্স অ্যাডভান্সড রিসার্চ প্রজেক্টস এজেন্সি (ডিএআরপিএ) লকহিড স্কাংক ওয়ার্ক ডিভিশনকে একটি কন্ট্রাক্ট ইস্যু করে দুটি স্টিলথ স্ট্রাইক ফাইটার নির্মাণ ও পরীক্ষা করার জন্য। যার কোড নেম হচ্ছে ‘হ্যাভ ব্লু’। তারা সেখানে অন্তর্ভুক্ত করে নরথ্রোপ টি-৩৪এ জেট ইঞ্জিন। এফ-১৬ এর ফ্লাই বাই ওয়্যার সিস্টেম। এ-১০ এর ল্যান্ডিং গিয়ার এবং সি-১৩০ এর এনভায়রনমেনটাল সিস্টেম। এসমস্ত প্রযুক্তি ও উপাদানসহ লকহিড দুটি ডেমনস্ট্রেটর নির্মাণ করে উভয় এয়ারক্রাফটের জন্য ৩৫ মিলিয়ন ডলার বাজেটে রেকর্ডসম সময়ে।
No comments